চাই ব্যাটিং উইকেট !

একটা ব্যাপার আমাকে খুব ভাবাচ্ছে। সেটা হলো—উইকেট। আমরা যে উইকেট তৈরি করছি, তা থেকে কতটা সুফল পাচ্ছি? আমরা তৈরি করছি স্লো এবং নিচু বাউন্সের উইকেট। চেষ্টা করি এই উইকেটে নিজেরা ২৩০-২৪০ করে পরে স্পিনের জালে প্রতিপক্ষকে আটকে দিতে। কিন্তু ভারত ম্যাচটা বাদে বাকি দুই ম্যাচে আমরা উইকেটের সুবিধা পাইনি। এ অবস্থায় ইংল্যান্ড ম্যাচে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট হলেই ভালো হয়। প্রথম ম্যাচে উইকেট তুলনামূলক স্পোর্টিং ছিল। ভারত ৩৭০ করেছে, আমরা করেছিলাম ২৮৩। ভালো স্কোরই বলব। ওইদিন আমরা আগে ব্যাট করে ২৮৩ করলে হয়তো ভারত সহজেই পেরিয়ে যেত। কিন্তু এটা ঠিক, যত বড় দলই হোক, ৩০০-এর কাছাকাছি রান তাড়া করা একটা চাপ। সেই চাপে ভারত পড়তে পারত। পরশু আয়ারল্যান্ডের ২০৭ রান তাড়া করতে নেমেই সেটা তারা বুঝিয়ে দিয়েছে। হ্যাঁ, আয়ারল্যান্ড ম্যাচটা আমরা জিতেছি, কিন্তু ২০৫ করতেই তো আমাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। তাহলে স্পিন উইকেট থেকে আমরা কতটা ফায়দা তুলতে পারছি, সেটি ভেবে দেখার বিষয় নয় কি ? ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে আমরা ২৩০-২৪০ করলে কি জিততে পারতাম? হয়তো হ্যাঁ, হয়তো না। এটা ঠিক, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে সারওয়ান-চন্দরপলের মতো লম্বা ইনিংস খেলার ব্যাটসম্যান আছে। এই রান ওদের কাছে নিরাপদ নয়। কিন্তু ওই যে বললাম, কী ঘটবে কেউ তো আর আগে জানে না। কাজেই আমাদের বোধ হয় ব্যাটিং উইকেটই এখন দরকার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মোটামুটি বড় একটা স্কোর করতে পারলে পরে তো আমাদের হাতে রাজ্জাক-সাকিবের মতো বোলার থাকবে। আমার বিশ্বাস, এরা কেবল আমাদের কন্ডিশনেই নয়, বিশ্বের যেকোনো উইকেটে ভালো বল করতে পারে। রাজ্জাক ওয়েস্ট ইন্ডিজে ভালো করেনি? সাকিব উস্টারশায়ারের হয়ে বল হাতে ব্যাটসম্যানদের ওপর কর্তৃত্ব করেনি? ইংল্যান্ডে আমরা ইংল্যান্ডকে হারাইনি? ওগুলো তো ছিল সিমিং উইকেট। এখানে ওরা পারবে। তা ছাড়া ব্যাটিং উইকেটে বড় রান পেলে অন্য বোলাররাও জ্বলে ওঠার একটা ভিত পেয়ে যায়।আর একটা ব্যাপার আলাদা করে বলব, সাকিব তো আর প্রতিদিন টস জিতবে না। এটা ভাগ্যের ব্যাপার। টস জিতেও দেখা যাচ্ছে, সুফল ঘরে নেই। কিন্তু আল্লাহ না করুন, টস হারলে কী হবে? তখন তো প্রতিপক্ষই সুবিধাটা আরও বেশি করে নেবে। এ কারণেই আবারও বলছি, এখন ব্যাটিং সহায়ক উইকেট হলেই আমাদের জন্য ভালো। যেখানে টার্ন থাকবে না। বড় রান করে রাজ্জাক-সাকিবদের ওপর আস্থা রেখে দেখা যাক না কী হয়। ওরা তো আস্থার প্রতিদান দিয়েছে অনেকবার।

মাশরাফি বিন মুর্তজা লিখছেন প্রথম আলোয়