আশা আর স্বপ্নে ঘেরা মুস্তাফিজ

বিপক্ষ দলের হুমকি হয়ে উঠতে পারেন এমন পেসারই বাংলাদেশ কম। তাদের মধে বাঁহাতি ফাস্ট বোলারের সংখ্যাটা আরও কম। অনেকে এসেছেন, তবে নানান কারণে পারেননি দীর্ঘস্থায়ী হতে। বিশ্বকাপে শেষ আটে খেলার সুখস্মৃতি নিয়ে দেশের মাটিতে বাংলাদেশ যখন ব্যস্ত একের পর এক সিরিজে তখনই যেন আবির্ভাব ঘটল বাঁহাতি পেস বোলিং তারকার।

ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণের আশ্বাস মুস্তাফিজের

সাতক্ষীরার তেঁতুলিয়ার তেপান্তর থেকে উঠে আসা তরুণ মুস্তাফিজুর রহমান এসে দাপিয়ে বেড়ালেন মিরপুর। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেকে নিয়ন্ত্রিত বোলিং। তবে ঝাঁঝটা বোঝা গেল ওয়ানডেতে। ওয়ানডে অভিষেকেই বাজিমাত। এক সিরিজেই বনে গেলেন বিশ্ব ক্রিকেটের বড় তারকা। হয়ে গেলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম বিজ্ঞাপন।

মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং কাঁপিয়ে দিল বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটিং লাইনকে। ভারতকে প্রথমবারের মত সিরিজ হারাল বাংলাদেশ। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে এক ওভারে চার উইকেট শিকার করলেন। মুস্তাফিজের এমন পারফরম্যান্স নজড় কেড়েছিল সবার। টুইটার থেকে শুরু করে নানান প্রতিক্রিয়ায় মুস্তাফিজকে নিয়ে ক্রিকেটের খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের বন্দনা চলতে থাকে। মিডিয়াতেও মুস্তাফিজ হয়ে উঠেন ‘হটকেক’।

নানান উপাধিও জুড়তে থাকে মুস্তাফিজের নামের পাশে। তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দেওয়া “ফিজ” নামটি জনপ্রিয় হয়ে উঠে বেশ। একের পর এক কাটার দিয়ে ব্যাটসম্যানদের নাকাল করে সুখ্যাতি পান কাটার-মাস্টার হিসেবে। গতির বৈচিত্র্যতা দিয়ে ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করতেন প্রতি ওভারেই।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাঠ মাতানোর পর বিশ্বের অন্যতম বড় ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লিগ আইপিলেও দ্যুতি ছড়ান মুস্তাফিজ

তবে প্রতি ম্যাচেই তো আর মুড়ি-মুড়কির মতো পাঁচ-ছয় উইকেট তুলে নেওয়া সম্ভব নয়। তা মুস্তাফিজুরেরও জানা থাকার কথা। পথচলাটা মসৃণ হতে দেয়নি চোট। কাঁধের চোটের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন দীর্ঘদিন। চোটের সঙ্গে লড়াই করে পুরোনো ছন্দে ফিরে আসাটা সহজ কথা নয়। সেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মুস্তাফিজ।

বয়স সবেমাত্র ২২। ১৯ বছরেই অভিষেক হয়ে যাওয়ায় ক্যারিয়ারের প্রারম্ভিক সময় বললে হয়তো মেনে নিবে না অনেকেই। তবে মুস্তাফিজুরের হাতে এখনো রয়েছে অনেক সময়। সেই সময়টা কাজে লাগাতে হবে যথাযথভাবে। প্রতি ম্যাচে পাঁচ-ছয় উইকেট কিংবা অতিমানবীয় পারফরম্যান্স সম্ভব নয়। তবে শতভাগ ফিট মুস্তাফিজের রয়েছে ধারাবাহিক ভালো বোলিংয়ের সামর্থ্য।

বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের অনযতম অস্ত্র হয়ে উঠেছেন ইতোমধ্যেই। নিজেকে করতে হবে আরো শাণিত। ক্রিকেটে যখন টি-২০ লিগের ছড়াছড়ি তখন মুস্তাফিজকেও হতে হবে সচেতন। আমলে নিতে হবে শরীরের ধকলটাও। চোটের কারণে অনেক ক্রিকেটারই দিতে পারেননি নিজের শতভাগ। হারিয়ে গিয়েছেন নানান কারণে। মুস্তাফিজুর রহমানের মতো এমন প্রতিভাবান পেসার যখন বহুদিন পর উঠে আসে, তখন তাকে হারিয়ে ফেলাটা কাম্য নয়। তার সমকালীন অনেক পেসারই ধারাবাহিকতার অভাবে এখন জাতীয় দলের বাইরে। মুস্তাফিজের মতো নক্ষত্রের খসে পড়াটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটা বড় ক্ষতিই হয়ে থাকবে।

২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ। আগের কোনো বিশ্বকাপের চাইতে এ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নিয়ে আশার পারদ সবচেয়ে বেশি উঁচুতে। সেই আশা পূরণে, স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের অন্যতম কারিগর হতেই পারেন মুস্তাফিজুর রহমান।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একমাত্র বাংলাদেশি বোলার হিসেবে মুস্তাফিজের ৫ উইকেট শিকারের ভিডিও-


আরও পড়ুনঃ এশিয়া কাপের জন্য এশিয়ার সেরা পাঁচ দলের স্কোয়াড

The post আশা আর স্বপ্নে ঘেরা মুস্তাফিজ appeared first on বিডিক্রিকটাইম.



from বিডিক্রিকটাইম https://ift.tt/2wLowwe