প্রথম আসরে চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে হারের প্রতিশোধ নিল দুরন্ত রাজশাহী দ্বিতীয় আসরে

বিপিএলের দ্বিতীয় আসর যেন প্রতিশোধ নিতেই মাঠে নামছে দল গুলো। প্রথম আসরে চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে হারের প্রতিশোধ নিল দুরন্ত রাজশাহী দ্বিতীয় আসরে। বিপিএলের প্রথম দেখায় দুরন্ত রাজশাহী কিংসদের সঙ্গে হেরেছিল ৫৩ রানে। আর দ্বিতীয় আসরে প্রথম দেখায় তারা জয় তুলে নিল ২ রানে। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের হারিয়ে বিপদে পড়া দুরন্ত রাজশাহী দুর্দান্ত এক জয় দিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) শুভ সূচনা করছে গতকাল মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে। আর প্রথম আসরে খুলনার সঙ্গে হারা ঢাকা ও বরিশালের সঙ্গে হারা সিলেট এই আসরে জয় তুলে নিয়েছে প্রতিশোধ। গতকাল চরম উত্তেজনা লো-স্কোরিং ম্যাচে তামিম ইকবালের চ্যালেঞ্জেরই জয় হয়েছে। প্রথম আসরে চিটাগাং কিংসের অবহেলিত আইকন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল এবার রাজশাহীর অধিনায়ক। প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেট ৯৯ রান করতে সমর্থ হয় তামিমের রাজশাহী। আর দুরন্ত রাজশাহীর দুরন্ত বোলিং ফিল্ডিংয়ে তিন বল আগেই ৯৭ রানে অলআউট হয়ে যায় মাহমুদুল্লাহ’র চিটাগাং কিংস।  
জয়ের জন্য ১০০ রানের সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে চিটাগাং কিংস। ২৫ রানের মধ্যে উপরের সারির তিন সেরা ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেইলর জেসন রয় ও রাবি বোপারাকে হারায় তরা। এরপর বেশ দক্ষতার সঙ্গেই টেনে তুলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ ও মেহরাব হোসেন জুনিয়র। কিন্তু জুটিটাকে খুব বেশি বড় করতে পারেননি তারা। ব্যক্তিগত ১৮ রানে মেহরাব ফিরে গেলে জুটি ভাঙ্গে ৩৯ রানের। তার বিদায়ের কিছুক্ষন পরই নাইম ইসলাম আউট হলে চাপ বেড়ে যায় চট্রগ্রামের। সেই চাপ আরো বড় আকার ধারন করে নিউজল্যান্ডের অলরাউন্ডার জ্যাকব ওরামের বিদায়ে। সেই জমে উঠা ম্যাচে আরও উত্তেজনা ছড়িয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। দলীয় ৮৭ রানে চট্রগ্রামের সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি। আবুলের তৃতীয় শিকার হবার আগে ৪০ রান করেন জাতীয় দলের সহ-অধিনায়ক।  অষ্টম উইকেটে জুটি বেঁেধ ধীরে ধীরে দলকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন মার্শাল ও আরাফাত সানি। জয় থেকে ৬ রান দূরে থাকতে ক্যাচও দিয়েছিলেন মার্শাল। কিন্তু সেই ক্যাচ হাত ফসকে যায় জিয়াউর রহমানের। ফলে বড় বিপদ থেকেই রক্ষা পায় চিটাগাং। কিন্তু তখনও যে নাটকের বেশ কিছু কাহিনী বাকী। আর তা করে দেখাল রাজশাহী দূরন্ত ভাবেই। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ৩ রান দরকার ছিল চিটাগাং কিংসের। আর বল হাতে ছিলেন রাজশাহীর আরভিন। আর ঐ ওভারে প্রথম বলেই মার্শালকে ফিরিয়ে দেন আরভিন। আর পরের  বলে দুর্দান্ত ফিল্ডিং-এ এনামুল হককে রান আউটের করে সাজ ঘরে  ফেরান তামিম। ফলে প্রথম দুই বল থেকে কোন রান সংগ্রহ করতে পারেনি চট্রগ্রাম। আর শেষ বেলায় বাজিমাত করেন আরভিন। নিজের করা তৃতীয় বলে আরাফাত সানিকে বোল্ড করে দলকে স্মরনীয় জয় এনে দেন আরভিনই। রাজশাহীর পক্ষে ২০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন আবুল হাসান। ম্যাচের সেরা হয়েছেন রাজশাহীর শন আরভিন। এর আগে মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে কিংসের  বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেয় দুরন্ত রাজশাহী। কিন্তু দুই ওপেনারের কাছ থেকে শুরুটা ভালো পায়নি রাজশাহী। দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে বেকাদায় পড়া রাজশাহীকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তামিম। ২টি বাউন্ডারির সহায়তায় ১৬ বলে ১৭ রান করেন তামিম। তামিমকে ফিরিয়ে দেবার পরের বলেই জিম্বাবুয়ের শন আরভিনকে আউট করে রাজশাহীকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন মাহমুদুল্লাহ। জিয়াউর ১৩ ও ফরহাদ ৬ রানে ফিরেন। ফলে বড় স্কোর গড়ার পথ একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় রাজশাহীর। তারপরও শেষদিকে মুক্তার আলীর অপরাজিত ২২ রানে সম্মানজনক স্কোর গড়তে সমর্থ হয় রাজশাহী। এছাড়া অতিরিক্তর খাতায় যোগ হয়েছে ১৬ রান। চট্রগ্রামের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ ও বোপারা।