দেশের পক্ষে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মুশফিক

আশরাফুল যা পারেননি, সেটা করে দেখালেন মুশফিক। প্রথম বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে করলেন ডাবল সেঞ্চুরি। আর দেশের পক্ষে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের স্কোর। গতকাল বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড করেছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। এর আগে গতকাল মোহাম্মদ আশরাফুলের করা সর্বোচ্চ ১৯০ রানের রেকর্ড ভেঙ্গে টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ২০০ রানের স্কোরও গড়েন তিনি। গলে টেস্টের চতুর্থ দিনে ১৬১তম ওভারে অজমত্মা মেন্ডিসের বল মিডউইকেট দিয়ে সীমানা ছাড়িয়ে আশরাফুলের ১৯০ রানের রেকর্ড ভেঙ্গে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন এই অধিনায়ক। আর কুলাসেকারার বলে ১ রান নিয়ে ডাবল সেঞ্চুরি করে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান মুশফিক। ৩২০ বলে ২২টি চার ও ১টি ছয়ের সাহায্যে ডাবল সেঞ্চুরি করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। তবে ডাবল সেঞ্চুরি করার পরের বলেই কুলাসেকারার বলে এলবিডবিস্নউর ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের ৩১তম টেস্ট খেলছেন মুশফিক। এর আগে টেস্টে একটি মাত্র সেঞ্চুরি ছিল তার। ২০১০ সালে চট্টগ্রামে ভারতের বিপক্ষে ১০১ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড সফরে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে সুযোগ পান মুশফিক। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। এরপর একে একে তারই নেতৃত্বে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ওয়ানডে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। এর আগে এশিয়া কাপে ভারত-শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে রানার্সআপ হয় বাংলাদেশ। আগের দিনের করা ১৮৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে গতকাল ডাবল সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও মোহাম্মদ আশরাফুল এক রান যোগ করে ফিরে যান ১৯০ রানে। দারম্নণ সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যমত্ম আশরাফুল যেটা পারেননি সেটাই করেছেন মুশফিক। ১৫২ রান নিয়ে খেলতে নেমে ২০০ রান করেই মাঠ ছেড়েছেন। আশরাফুলের সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংসের রেকর্ড গড়ার দিনে অনেকটা আড়ালেই ছিলেন মুশফিক। কিন্তু শেষ পর্যমত্ম তিনিই বাজিমাত করেছেন।  গল টেস্টের চতুর্থ দিন শুরম্নর আগে আলোচনা ছিল মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে। অপেক্ষা ছিল টেস্টে প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানের দ্বিশতকের ইনিংস দেখার। ১৮৯ রান নিয়ে শুরম্ন করেন আশরাফুল। কিন্তু অহেতুক ঝুঁকি নিতে গিয়ে মাত্র ১ রান করেই বিদায় নেন আশরাফুল। এতেই সুযোগ হাতছাড়া হয় তার। কিন্তু সুযোগ হাতছাড়া না করে মুশফিক নতুন ইতিহাস গড়েন। আশরাফুল ১৯০ রানে সাজঘরে ফিরলে নাসির হোসেন এসে জুটি বাধেন অধিনায়কের সঙ্গে। দেখে-শুনে খেলে এগুচ্ছিলেন তারা। নাসিরকে নিয়ে ১০৬ রান যোগ করেন মুশফিক। ৩২০ বলে ২২ চার ও এক ছয়ে ২০০ রান করে ইতিহাস গড়েন অধিনায়ক মুশফিক। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে অবিচ্ছিন্ন ছিল আশরাফুল-মুশফিক জুটি। আশরাফুল ১৮৯ আর মুশফিক ১৫২ রানে অপরাজিত থেকে গতকাল সকালে ব্যাট করতে নামেন। এক রান যোগ করে আশরাফুল আউট হলেও মুশফিক চালকের আসনে থেকে এগিয়ে নেন দলকে। পঞ্চম উইকেটে মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকের রেকর্ড ২৬৭ রানের জুটি হয়। এর আগে আশরাফুলের সঙ্গে ২৬৭ রান এবং নাসিরের সঙ্গে ৯১ রানের জুটি গড়ে তুলেন মুশফিক। মুশফিকের দুটি অসাধারণ জুটিতে বাংলাদেশ টেস্টে সর্বোচ্চ ৬৩৮ রানের স্কোরও গড়েন। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লিড নেয় ৬৮ রানে। শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত গল টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অনবদ্য ডাবল সেঞ্চুরি করায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকে ৪ লাখ টাকা এবং শত রান করায় নাসির হোসেনকে ২ লাখ টাকা পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ আহাদ আলী সরকার। এর আগে গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিম অনবদ্য দেড় শতাধিক রান করায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ আহাদ আলী সরকার তাদেরকে তিন লাখ টাকা করে পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দেন। গতকাল মুশফিকুর রহিম ডাবল সেঞ্চুরি করায় তার পুরস্কার  তিন লাখ টাকা থেকে চার লাখ টাকায় বৃদ্ধি করা হয়।