বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ টি-টোয়েন্টিতে ফাঁকা গ্যালারি

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই ক্ষুদ্র সংস্করণ মানে ব্যাটে-বলে টানটান উত্তেজনা। আর সেই উত্তেজনা দর্শকদের মুহুর্মুহু করতালিতে আর বাঁধভাঙা উল্লাসে মুখর হয়ে উঠবে গ্যালারি। আইপিএল বা ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে যা নিয়মিত চিত্র। বাংলাদেশেও সেই আইপিএলের অনুকরণে হচ্ছে বিপিএল বা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ টি-টোয়েন্টি। প্রথম আসরে অনেক আবেদন সৃষ্টিকারী এই টুর্নামেন্টটি দ্বিতীয় আসরে এসে মুখ থুবড়ে পড়েছে। আর সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিকটু বিষয় আসরে প্রথম দু’দিনে ফাঁকা গ্যালারি। ২৫ হাজার ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামে এক হাজারের বেশি দর্শক হওয়াও যেন কষ্টকর। কি এর কারণ? কারণটা সরাসরি বলে দিলেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক। তিনি বলেন, ‘টিকিটের অতিরিক্ত দামের কারণেই দর্শকরা মাঠ-বিমুখ। আর আমরা বার বার বলেও টিকিটের স্বত্ব কিনে নেয়া প্রতিষ্ঠান একটিভ সার্ভিসকে এর দাম কমাতে পারছি না।’ প্রথম আসরেও টিকিটের অতিরিক্ত মূল্য থাকায় দর্শকরা এভাবে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। পরে বিসিবির অনুরোধে সেই মূল্য কমানোর পরই দর্শক ভরপুর হয়ে উঠে মাঠ। এবার সাধারণ গ্যালারির সর্বোনিম্ন টিকিটের মূল্য রাখা হয়েছে ৩৫০ টাকা। আর এই টিকিট এয়ার টেল গ্রাহক আর ছাত্র-ছাত্রীরা পাবেন ৩০ শতাংশ ছাড়ে। তখন এই মূল্য দাঁড়াবে ২৪৫ টাকা। কিন্তু এয়ার টেল এই ছাড়া দিয়েছেন নানা প্যাকেজ, শর্ত আর বান্ডলের ওপর, যা দর্শকদের জন্য ভীষণ ভোগান্তির। আর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড়ে টিকিট কিনতে হবে মিরপুর ম্যাচ ভেন্যু থেকে, যা ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক বিড়ম্বনার। আর দর্শকরা অভিযোগ করেছেন টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না ব্যাংকেও। এছাড়াও গ্রান্ড স্ট্যান্ডের টিকিট ধরা হয়েছে ২১০০ টাকা। এক দর্শক অভিযোগ করে বলেন, দেখেন আমরা মাঠে খেলা দেখতে আসি পরিবার বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে। কিন্তু একটি টিকিটের দাম যদি হয় ২১০০ টাকা, সেই ক্ষেত্রে পরিবারের ৩ জন লোক নিয়ে কিভাবে আসবো? আর এখানে খাবারের যে দাম তার জন্যও প্রয়োজন অনেক টাকা। তাই অনেকের স্বাদ থাকলেও সাধ্য নেই। অন্যদিকে বাংলাদেশে দর্শকরা আন্তর্জাতিক ম্যাচে সর্বোনিম্ন ৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার টিকিটে বেশি অভ্যস্ত। আর পাকিস্তান বা বিদেশী তারকা ক্রিকেটার ছাড়া বিপিএলের ম্যাচ দেখতে সাধারণ দর্শকরা  কেন মাঠে আগ্রহ বোধ করবেন? তবে মল্লিক বলেছেন ‘আমরা চেষ্টা করছি। গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আফজালুর রহমান সিনহাও বলেছেন এই টিকিটের মূল্য কমাতে আজই (গতকাল) আমরা টিকিটের ওদের সঙ্গে বসবো। তবে আমরা ওদের অনুরোধই করতে পারি জোড় করতে পারবো না। কারণ এই টিকিটের চুক্তি হয়েছে গেম অন স্পোর্টের সঙ্গে। আর গেম অনের সঙ্গে আমাদের। আর সেই চুক্তিতে কোথাও লেখা নেই যে আমরা বিসিবি চাইলে এই মূল্য পরিবর্তন করতে পারবো।’ কিন্তু এই চুক্তি আপনারা কি ভাবে করলেন? আর এই প্রশ্ন সামনে আসতেই মল্লিক বলেন, ‘এটা আমাদের বোর্ডের করা চুক্তি না। এই চুক্তি করেছে পুরো বোর্ড। তাই আমরা ভাবছি এবার গেম অন স্পোর্টের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করবো। এছাড়াও ওদের আগের অনেক মালিকও এখন নেই। নতুন করে অনেক মালিক হয়েছে। তাই আমাদের চিন্তায় আছে গেম অন স্পোর্টের সঙ্গে নতুন ভাবে চুক্তি করার।’