অবশেষে গর্জে উটেছে টাইগারা !!!!!!!

সমুদ্র তীরে ঢেউয়ের গর্জন শুনতে পাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু ইংলিশ ক্রিকেটাররা শুনল টাইগারদের বোলিংয়ের গর্জন। সাকিবদের দাপুটে বোলিংয়ে ছিন্নভিন্ন হলো ইংলিশ দুর্গ। ৪৯.৪ ওভারে মাত্র ২২৫ রানেই অলআউট স্ট্রাউস বাহিনী। অবশ্য গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের টস জয় দিয়ে। ভাগ্যবান অধিনায়কই বটে সাকিব। বিশ্বকাপের চার ম্যাচেই তিনি জিতেছেন টস। এটা একটা রেকর্ড হয়ে গেল কিনা তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে।এদিকে রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত টাইগাররা ব্যাটিংয়েও ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল। তারা ২৮ ওভারে ৩ উইকেটে সংগ্রহ করে ১৩৫ রান। ওপেনার ইমরুল কায়েস ৯১ বল খেলে তার সপ্তম ওয়ানডে ফিফটি পূর্ণ করেন। তিনি ৫১ রানে এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ২০ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। শেষমেষ টাইগাররা যদি বোলিং-ফিল্ডিংয়ের মতো তাদের ব্যাটিং নৈপূণ্য বজায় রাখতে পারে জয় হাতছাড়া হবে না। আর না হলে বোলিং-ফিল্ডিংয়ের সাফল্যটাই সমর্থকদের কাছে 'বড় সান্ত্বনা' হয়ে থাকবে।এর আগে টসে জিতে সাকিব উইকেটের কথা চিন্তা করে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সফল করেন বোলাররা। পরিষ্কার করে বললে স্পিনাররা। কেননা কাল নাঈম, সাকিব, রাজ্জাক ও মাহমুদুল্লাহ চার স্পিনারই নিয়েছেন সাতটি উইকেট। শুরুটাও করেছিলেন স্পিনাররাই। রাজ্জাক ইংলিশদের প্রথম উইকেটটি (প্রিয়র) তুলে নিয়ে শুরুটা করে দেন। এদিকে রুবেল তার প্রথম স্পেলে তিন ওভার বল করে কোনো উইকেট না পেলেও মাত্র পাঁচ রান দিয়েছেন। বিশ্বকাপে বোলারদের আতঙ্ক ইংলিশ অধিনায়ক স্টাউসকে রান না দেওয়াই বড় সাফল্য। তবে ইংলিশ দূর্গে প্রথম আঘাতটাও তো করেন পেসার রুবেলই। ৩২ রানে স্টাম্পিং হয়ে যান ইংলিশ ওপেনার ম্যাট প্রিয়র। এক্ষেত্রে চমৎকার বুদ্ধিমত্ত্বার পরিচয় দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।নাঈম ইসলামের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে স্টাউস স্লিপে জুনায়েদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নিলে পুরো স্টেডিয়াম আনন্দে ভাসে। সাগর পাড়ে শুরু হয় উৎসবের জোয়ার। সাগর পাড়ে এই কারণে যে আসলে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামটাই সাগরের কোল ঘেঁষে।প্রথম তিন ম্যাচে স্পিন জাদুকর রাজ্জাক সেভাবে জ্বলে উঠতে না পারায় সমালোচনা হচ্ছিল। র‌্যাঙ্কিংয়ে ছয় ধাপ পিছিয়ে রাজ্জাক নিজেই যেন ভালো করার জন্য ছটফট করছিলেন। কাল ৩২ রানে ২ উইকেট নিয়ে কিছুটা হলেও শান্তনা পেয়েছেন তিনি। রান দেওয়ার ক্ষেত্রে নাঈম ইসলাম কালও ছিলেন বেশ হিসাবি। ২৯ রানে তিনি নিয়েছেন ২ উইকেট। দুই উইকেট নিয়েছেন সাকিবও। রুবেল, শফিউল, মাহমুদুল্লাহও বাদ যাননি। তারা একটি করে উইকেট পেয়েছেন।ম্যাচ শুরুর আগেই স্ট্রাউস বাংলাদেশের স্পিন নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিলেন। সেই স্পিন যাদুর কারণেই ইংলিশদের বেধে রাখা গেল ২২৫ রানে। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম জোনাথন ট্রট ও ইয়ান মর্কেল। মাত্র ৫৩ রানে ইংল্যান্ডের তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরলেও তারা দুজন মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ২২ ওভারে ১০৯ রান করেন। ট্রট ও মর্কেল যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন মনে হচ্ছিল যেন একটা বড় ইনিংসের দিকেই যাচ্ছে ইংল্যান্ড। কিন্তু মর্কেল ৬৩ ও ট্রট ৬৭ রানে আউট হয়ে যাওয়ার পর বাকিরা কেউ উইকেটে সেট হতে পারেননি। লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা একের পর এক আউট হয়েছেন। মাত্র ৩০ রানে ইংল্যান্ডের শেষ ৫ ব্যাটসম্যান আউট হন।